৭২ ঘণ্টায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
অনেকেই ডায়াবেটিস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন ওষুধ ও ইনসুলিনের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত আছে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তবে এবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এসেছে এক নতুন আশার আলো। “হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টার” দাবি করছে, মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব, তাও কোনো ওষুধ বা ইনসুলিন ছাড়াই।
সম্প্রতি রাজধানীর পান্থপথে “৭২ ঘণ্টায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ” শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন, বিশেষ কিছু ব্যায়াম এবং খাদ্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিসকে ওষুধ বা ইনসুলিনের সহায়তা ছাড়াই নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমকালের উপ-সম্পাদক আবু সাঈদ খান এবং হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস।
আবু সাঈদ খান জানান, অনেকেই এখন ব্যায়াম এবং মেডিটেশন থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, ওষুধ কোম্পানিগুলোর বাণিজ্যিক নীতির কারণে মানুষের মধ্যে ওষুধ নির্ভরতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এভাবে ওষুধের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে কীভাবে সুস্থ থাকা যায়, সে বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ওষুধ ও ইনসুলিনের চেয়ে নিয়মিত ব্যায়াম এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনেক বেশি কার্যকর তা জানান।
অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস বলেন, “ডায়াবেটিস কোনো প্রাণঘাতী রোগ নয়। এটি সব রোগের উপসর্গ হিসেবে কাজ করে। তবে সঠিক জীবনযাপন এবং নিয়ম মেনে চললে ডায়াবেটিস আক্রান্ত একজন ব্যক্তি সুস্থ ও দীর্ঘজীবী হতে পারেন। হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টারে আমরা এমন কিছু রোগী পেয়েছি যারা দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ ও ইনসুলিন ব্যবহারের পরও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছিলেন না। কিন্তু কিছু সুনির্দিষ্ট কৌশল এবং প্রক্রিয়া অনুসরণ করার মাধ্যমে তাদের ডায়াবেটিস এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক রোগী তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। বেসরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মহীন্দ্র নাথ বলেন, তিনি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন এবং প্রতিদিন ৫৬ ইউনিট ইনসুলিন নিতে হতো। কিন্তু এখন তিনি ওষুধ এবং ইনসুলিন ছাড়াই শুধুমাত্র ব্যায়াম ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সুস্থ আছেন। একইভাবে ফরিদপুরের এক গৃহবধূ বলেন, তিনি প্রতিদিন ১০০ ইউনিট ইনসুলিন নিতেন, কিন্তু এখন হলিস্টিক হেলথ কেয়ারের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন ছাড়াই সুস্থ জীবন যাপন করছেন।
অনুষ্ঠানে ডা. আলমাসুর রহমান ডায়াবেটিস রোগীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেন এবং কিভাবে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমাদের সমাজে ওষুধের ওপর নির্ভরতা দিন দিন বাড়ছে, অথচ প্রাকৃতিক উপায়ে সুস্থ থাকার গুরুত্ব আমরা প্রায় ভুলতে বসেছি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং মানসিক প্রশান্তি অর্জনের জন্য মেডিটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি আবু সাঈদ খান উল্লেখ করেন, “আমাদের সমাজে এখন মানুষেরা দ্রুত সমাধান চায়, আর তাই ওষুধের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। কিন্তু এই ওষুধগুলি দীর্ঘমেয়াদে নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এই কারণে আমাদের প্রয়োজন ওষুধ নির্ভরতা কমিয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণ করা।”
হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রোগ্রামটি সবার মধ্যে সঠিক স্বাস্থ্য জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিভাবে ওষুধ ও ইনসুলিন ছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা এবং পরামর্শমূলক কার্যক্রমও এখানে চলছে।
অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস এই পদ্ধতির কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান যে, তারা যেন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সচেতন হন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন গ্রহণ করেন। ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক প্রশান্তির কোনো বিকল্প নেই।
অংশগ্রহণকারীদের অনেকে অনুষ্ঠানে জানান যে, আগে তারা ওষুধ ও ইনসুলিনের ওপর নির্ভর করতেন, কিন্তু এখন তারা ওইসব ছাড়াই ভালো আছেন। তারা আশা করছেন, এই পদ্ধতি ডায়াবেটিসের রোগীদের নতুন পথ দেখাবে এবং ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনবে।
এই পদ্ধতি শুধু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ নয় বরং সামগ্রিকভাবে সুস্থ জীবনযাপনের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি সুখবর, কারণ মাত্র ৭২ ঘণ্টায় ওষুধ বা ইনসুলিন ছাড়াই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এটি সত্যিই একটি বড় আশার আলো।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করণীয়
ডায়াবেটিস হচ্ছে একটি দীর্ঘমেয়াদী অবস্থা, যেখানে রক্তে শর্করার মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিম্নে কয়েকটি করণীয় তুলে ধরা হলো:
১. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা
- সুষম খাবার গ্রহণ: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য সুষম ও প্রাকৃতিক খাবারের প্রতি মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। খাবারে শর্করা ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ যেন বেশি না থাকে, সে দিকে লক্ষ রাখুন। অপ্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন: শাকসবজি, ফল, দানাশস্য, স্বাস্থ্যকর চর্বি (যেমন: অলিভ অয়েল, বাদাম) এবং কম চর্বিযুক্ত মাংস রাখলে শরীরে সহজেই এনার্জি পাওয়া যাবে।
- খাবারের বৈচিত্র্য: পুষ্টি নিশ্চিত করতে এবং খাবারের প্রতি আগ্রহ ধরে রাখতে খাদ্য তালিকায় বৈচিত্র্য আনা জরুরি। প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনি মিশ্রিত পানীয় এবং উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার কমানোর চেষ্টা করুন।
- খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: খাবার পরিমিতভাবে খাওয়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বেশি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বাড়তে পারে। তাই, প্রতিবার কম করে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
২. নিয়মিত শরীরচর্চা করা
- ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা: ডায়াবেটিসে নিয়মিত শরীরচর্চা শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম, যেমন: হাঁটা, সাঁতার বা সাইকেল চালানো উচিত। এতে শরীরের শক্তি বাড়ে, মাংসপেশি সুগঠিত হয় এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- পেশি গঠনমূলক ব্যায়াম: মাংসপেশি গঠনের ব্যায়ামও শরীরের জন্য বেশ উপকারী। শক্তি বর্ধক ব্যায়াম শরীরের মেটাবলিজম উন্নত করে এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। সামান্য ওজন কমালেও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৪. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
মানসিক চাপ শরীরে কর্টিসল ও অন্যান্য হরমোন বাড়িয়ে রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করে। তাই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে ধ্যান, যোগব্যায়াম এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম কার্যকর। প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট নিরিবিলি সময় কাটানো, পছন্দের কাজে অংশ নেওয়া এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া মানসিক প্রশান্তি আনে।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান করা
পর্যাপ্ত পানি পান কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ায়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। দিনে অন্তত আট কাপ পানি পান করা উচিত। পানি শরীরে তৃষ্ণা নিবারণ করে এবং ডায়াবেটিসের লক্ষণ কমিয়ে দেয়।
৬. কার্বোহাইড্রেট গ্রহণে সতর্কতা
কার্বোহাইড্রেট ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত খাবার শর্করা দ্রুত বাড়ায়, তাই কম GI সমৃদ্ধ খাবার, যেমন: গোটা শস্য, ডাল এবং শাকসবজি গ্রহণ করা উচিত। এতে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং স্থায়ীভাবে এনার্জি দেয়।
৭. মিষ্টি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার
মিষ্টি খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বড় সমস্যা সৃষ্টি করে। চিনি মিশ্রিত পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার, রেড মিট, পোলাও, বিরিয়ানির মতো ভারী খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এসব খাবার রক্তে শর্করা বাড়ায় এবং অতিরিক্ত খেলে তা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে।
৮. ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা
ধূমপান ও মদ্যপান ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এসব অভ্যাস রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই অভ্যাসটি ত্যাগ করলে শরীর ভালো থাকে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
৯. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থাকলে বছরে অন্তত একবার রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরি। এতে পরিস্থিতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়।
ডায়াবিটে চিকিৎসা কেন নিবেন?
ডায়াবিটে আমরা সমন্বিত চিকিৎসার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীদের বিভিন্ন জটিলতা নিরাময়ে সহায়তা করি। এসব জটিলতার মধ্যে রয়েছে নার্ভের ব্যথা ও দুর্বলতা, কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিক ফুট বা পায়ের ক্ষত এবং রক্ত সঞ্চালনজনিত সমস্যা। সমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে ওজন থেরাপি (যা ওজন গ্যাসের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়), আকুপাংচার, ডায়াবেটো ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক এনার্জি, পালস ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড থেরাপি, এবং থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ প্রোগ্রাম অন্তর্ভুক্ত থাকে। এগুলো একসঙ্গে কাজ করে ডায়াবেটিসের জটিলতাগুলো কমাতে সাহায্য করে।
বিস্তারিত জানুন: কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে? দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
বিস্তারিত জানুন: ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়? এটি হলে কি লক্ষণ দেখা যায়?
বিস্তারিত জানুন: ডায়াবেটিসে ঢেঁড়স এর উপকারিতা, গুনাগুন ও বৈজ্ঞানিক নাম কি?
তথ্য সূত্র
Imperial Centre for Endocrinology — 72 hour fast information sheet
World Health Organization — Diabetes
DIABETES SINGAPORE — Managing diabetes: Blood glucose
সাধারণ জিজ্ঞাসা
সুগার ৪০০ হলে কত ইনসুলিন নিতে হয়?
সুগার ৪০০ হলে ইনসুলিন ডোজ নির্ধারণের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি। সাধারণত ডোজ নির্ভর করে রোগীর বয়স, ওজন, শারীরিক অবস্থা ও ইনসুলিন সংবেদনশীলতার উপর। এমন অবস্থায় নিজে থেকে ইনসুলিন নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস রোগী কতদিন বাঁচে?
কোনো ব্যক্তির প্রত্যাশিত বেঁচে থাকার সময়কে আয়ু বলা হয়। ৫০ বছর বয়সে, টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আয়ু ডায়াবেটিসবিহীন ব্যক্তিদের তুলনায় প্রায় ৬ বছর কম হতে পারে। তবে, সঠিক চিকিৎসা এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে এই আয়ু ৩ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।
ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে কমানোর উপায় কি?
রক্তে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে শর্করা কমানো প্রয়োজন হলেও তা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে উঠতে পারে। এ জন্য কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণ করা যেতে পারে:
- কাঁচা বা সেদ্ধ করে সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- ফাইবারে পরিপূর্ণ খাবার গ্রহণ করুন।
- চিনি ছাড়া চা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- সামান্য পরিমাণে চর্বিজাতীয় খাবার খান।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করুন।
- অল্প পরিমাণে শরবতও পান করে দেখতে পারেন।
খেজুর খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে?
খেজুর একটি মিষ্টি ও সুস্বাদু ফল, যা ফাইবার, খনিজ এবং ভিটামিনে ভরপুর। বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষণায় বলা হয়েছে, খেজুর খেলে রক্তে শর্করা বাড়ে না। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
ডায়াবেটিস রোগীর সকালের খাবার কি কি?
২ কাপ সেদ্ধ ভাত, ১টি সেদ্ধ ডিম (কুসুমসহ), মাছ বা মাংস, ১-২ কাপ মিশ্র সবজি, এবং ১-২ কাপ পাতলা ডাল। ক্যালরি: ২ কাপ ভাতে (২৪০ গ্রাম) ৩০০ কিলোক্যালরি, ডিম বা মাছ/মাংসে ৭০ কিলোক্যালরি, সবজি ও ডালে গড়ে ৫০ কিলোক্যালরি, তেলে ৫০ কিলোক্যালরি এবং চিনি ছাড়া এক কাপ চায়ে ২৫ কিলোক্যালরি। সব মিলিয়ে মোট ক্যালরি থাকে প্রায় ৪৯৫ কিলোক্যালরি।
তালের শাঁস খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে?
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে তালের শাঁসে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে এবং ডায়াবেটিসের জটিলতা কমাতে সাহায্য করে।